মিশরের রাজা ছিলেন নাম তুতেনখামেন। মাত্র নয় বছর রাজ্যশাসন করেও তিনি ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছিলেন। রাজাকে নিয়ে রহস্যের জট খুলতে চাইছে না। জানা যায় মাত্র 70 বছর বয়সে তিনি শারীরিক অসুস্থতায় মারা যান। তার এমন অকাল মৃত্যুর পিছনে কি রহস্য লুকিয়ে আছে তা এখনো জানা যায়নি।


িন্তু তার সমাধি আবিষ্কারের পর মুভির এক্সরে করে জানা যায়। তার মাথার পিছনের অংশে ছিল আঘাতের চিহ্ন। সেই সঙ্গে তার হাটগুলোতে ছিল ফাটল। একদল গবেষকের অনুমান রাজা তুতেনখামেন কে হত্যা করা হয়েছিল। আবার অনেকে দাবি সিরিয়ার যুদ্ধে মৃত্যু হয়েছিল এই রাজার।


১৯৬৮ সালে যখন গবেষকরা তার মুভি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন, তখন তারা জানতে পারেন তুতেনখামেনের মাথায় ভারী পাথর দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। অনেক গবেষক ধারণা করেন,ঘোড়ার গাড়ি থেকে অসাবধানতাবশত পাথরের উপর পড়ে গিয়ে রাজার মৃত্যু হয়েছিল‌।



২০০৫ সালে গবেষক জাহিদ হাওয়াস বলেন, হত্যা বা অপমৃত্যু নয়, বরং ম্যালেরিয়া তে তুতেনখামেনের মৃত্যু হয়। ২০১০ সালের এক গবেষণায় গবেষকরা দাবি করেন,রাজার শরীরের রক্তে লোহিত রক্তকণিকার অভাব ছিলো। ২০১৪ সালে তার ভার্চুয়াল অটোপসি করে দেখা হয়, তুতেনখামেনের বাম পায়ের হাড়ের রোগ ছিল। সেটিও জিনগত এবং ভাই বোনের বিয়ে হওয়ার কারণেই, জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।



এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত হওয়া বেশিরভাগ মমি চোরদের হাতে পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে যুবক ফারাওয়ের সমাধিটিই ছিল অক্ষত। ইউরোপিয়ানদের কাছে তিনি কিং টুট নামে পরিচিতি লাভ করেছিলেন । সুখ্যাতি রয়েছে,তুতেনখামেন তার জীবদ্দশায় অনেক পুরনো রীতি ও প্রথা পাল্টে নতুন প্রথার প্রচলন ঘটায়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, শনিদেবের পূজা বন্ধ করে চন্দ্রদেবের পূজার প্রথা প্রচলন।



তুতেনখামেনের সমাধি যখন উদ্ধার করা হয় তখন সেটি ছিল মিশরের রাজধানী কায়রোর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দূরে। ১৯২২ সালের ৪ঠা নভেম্বর তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কৃত হয়।সর্বপ্রথম তার সমাধিতে প্রবেশ করেন পুরাতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার এবং প্রাসঙ্গিক লর্ড কারনাভান।


তারপর অনেক চেষ্টা করে ১৯২৩ শারিফ ১৭ই ফেব্রুয়ারি তারা সমাজের দরজা ভাঙতে পারেন। অবাক হয়ে যান মমির কফিন খুলে। স্বর্ণের তৈরি আটটি কফিনের মধ্যে রাখা ছিল তার মমি। ইতিহাসে এমন মমির হদিস মেলেনি এখনো।প্রথম কফিনটি খোলার পর একে একে সাতটি ছোট বড় কঠিন খুলে অবশেষে তুতেনখামেনের মমি বের করেন গবেষকরা। সবগুলো কফিনে স্বর্ণ মনি-মুক্তার আবরণ ছিল। একটি স্বর্ণের মুখোশ পড়ানো ছিল তুতেনখামেনের মুখে। তার বুকের উপরে ছড়ানো ছিল শুকনো ফুলের পাপড়ি। গবেষকরা তুতেনখামেনের মমি ঠিক পাশেই একটি চিরকুট খুঁজে পান।তাতে লেখা ছিল রাজার শক্তি বিনষ্টকারীদের মৃত্যু। তার সমাধি ওই ঘর থেকে পাওয়া যায় মহামূল্যবান সম্পদ। এছাড়াও তুতেনখামেনের একটি সিলমোহর ছিল।হস্তশিল্প খুঁজে পাওয়া যায় তার সমাধি ক্ষেত্রে।




কথিত আছে, তার সমাধি নিয়ে যারা গবেষণা করতে গিয়েছে, তাদের আকস্মিকভাবে মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে নানা ব্যাখ্যাও রয়েছে।করা হয় তুতেনখামেনের সমাধি নাকি অভিশপ্ত। এর কিছু উদাহরণ রয়েছে রাজা তুতেন খামেনের সমাধি আবিষ্কারের কাজে যারা জড়িত ছিলেন তারা সবাই রহস্যময় ভাবে মারা গিয়েছেন। তবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন,অভিশাপ নয় বরং হাজার বছরের বিষাক্ত জীবাণু কারণে মৃত্যু হয়েছে উদ্ধারকর্মীদের কিন্তু তা মানতে নারাজ অন্যান্যরা।



২০১১ সালে তুতেনখামেনের সমাধি অন্যত্র সরানো হয়। যে তু তার সামাজিক অভিশপ্ত হিসেবে বিবেচিত, তাই মন্ত্র পড়ে ১২ জন মিলে ছড়ানো হয়েছিল তুতেনখামেনের কফিন। তবুও যুবকেই রাজার অকাল মৃত্যুর বিষয়ে জানতে গবেষকদের আগ্রহ রয়েছে তুঙ্গে।


WorldThatInteresting/JMS/ JKS
 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন